গাইবান্ধায় এক রশি থেকে দুই যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিং করেন পিবিআই গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) এ আর এম আলিফ। সেখানে তিনি বলেন, পরকীয়ার জেরে দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস ও সুমন কান্তি দাসকে হত্যার পর রশিতে ঝোলানো হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে পিবিআইয়ের এসপি এ আর এম আলিফ বলেন, ‘আত্মহত্যা নয়, পরকীয়ার জেরে দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস ও সুমন কান্তি দাসকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তাঁদের লাশ গাইবান্ধা সদর উপজেলার মিয়ারবাজার এলাকার একটি গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার নিহত দুজনের বন্ধু প্রদীপ চন্দ্র।’
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, ১২ আগস্ট সকালে উপজেলার পিয়ারাপুর গ্রামের একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের বন্ধু প্রদীপকে। প্রদীপ পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি গতকাল শনিবার আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গ্রেপ্তার প্রদীপ জবানবন্দিতে দাবি করেছেন, সুমনের মায়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধু নিতাই চন্দ্র দাসের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ নিয়ে সুমন ও নিতাইয়ের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে এ বিরোধের জেরে নিতাই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রদীপের সহযোগিতায় সুমন ও মৃণালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে মাদক সেবনের কথা বলে ১১ আগস্ট রাতে নিতাইয়ের বাড়িসংলগ্ন ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়া হয় সুমন ও মৃণালকে। নিতাই ও প্রদীপের পাশাপাশি আরও তিন থেকে চারজন এ হত্যায় যুক্ত ছিলেন। পরে এটি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য একটি গাছে এক রশির দুই মাথায় মৃণাল ও সুমনকে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
পিবিআইয়ের এসপি আরও বলেন, ১২ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রংপুরের সদস্যরা লাশ দুটি উদ্ধার করেন। ওই দিনই এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটির তদন্তভার পায় গাইবান্ধা পিবিআই। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নিতাই ও তাঁর সহযোগীরা পলাতক আছেন বলে তিনি জানান। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
Leave a Reply