মোঃ মমিনুর রহমান, রংপুর ব্যুরোঃ
সব খেয়ে ফেলেছে সর্বনাশা তিস্তা নদী। বার বার নদীর পানি বাড়া ও কমায় নদীর ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে। আমাদের চিকিৎসা-সেবায় ভাটা পড়লো। অনেক দুরে ক্লিনিকের কাজ চলায় আমরা তেমন সেবা পাচ্ছি না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না। কথাগুলো বলছিলেন জয়নাল মিয়া, জসিম উদ্দিন ও আকলিমা বেগম।
জানা যায়, রংপুরের পীরগাছায় শিবদের চরের মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবার অবলম্বণ ছিল শিবদেব ক্লিনিক। এ ক্লিনিক থেকেই চরের মানুষজন চিকিৎসা-সেবা নিতেন। কিন্তু চোখের সামনেই তিস্তা নদীগর্ভে চলে গেছে গরীবের একমাত্র চিকিৎস্যার মাধ্যম শিবদেব ক্লিনিকটি। আশে পাশে যে ঘনবসতি ছিল তাও বিলীন। নয়ারহাট বাজারটির বেশির ভাগ চলে গেছে তিস্তার পেটে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব গ্রামের শেষ অংশে নয়ারহাট বাজার। যার আশে পাশে ছিল ঘনবসতি, দ্বিতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিকিৎসা সেবার জন্য ক্লিনিক। আর চারদিকে সবুজে ঘেরা গাছপালা ও ফসলের ক্ষেত। এখন কিছুই নেই। সব নদীগর্ভে বিলীন। ৫ বছর আগে তিস্তার পেটে চলে গেছে দ্বিতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এরপর একে একে গালপালা, ফসলী জমি চলে যায়। পাশেই নয়ারহাট বাজারে চলছিল বিদ্যালয়ের কাজ। সেটাও সরানো হয়েছে অনেক দুরে। চরাঞ্চলের গরীব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় থাকা শিবদেব ক্লিনিকটিও চলে গেছে রাক্ষুসী তিস্তার পেটে। নিভে গেছে গরীবের বাতিঘর। এক সময়ের মানচিত্রে থাকা গ্রামটি এখন শুধুই স্মৃতি। শিবদেব-নয়ারহাট এলাকার নদী ভাঙ্গনের শিকার শতাধিক পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। অনেকে ভাড়াটে জমি খুঁজছে আশেপাশে। নদীগর্ভে বিলীন শিবদেব ক্লিনিকের সব আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে আশ্রয়ন কেন্দ্রে। যা নয়ারহাট এলাকা থেকে ২ কিলোমিটার দুরে। ফলে চিকিৎসা সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষজনদের।
হঠাৎ প্রবল-বর্ষণ এবং উজানের পানিতে ভেসে যাচ্ছে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষিটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি,কেল্লারপাড়, বাগেরহাট আশ্রয়ন ০৩ নং ওয়ার্ড। ইকো সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন( ইএসডিও)”র প্রসপারিটি প্রকল্পের কর্মএলাকার পুষ্টি প্লাস কার্যক্রমসহ ক্ষতির মুখে অসংখ্য অতিদরিদ্র পরিবার বলে জানিয়েছেন ইএসডিও’ পুষ্টি কর্মকর্তা।
শিবদেব ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা ফরহাদ হোসেন বলেন, ভাঙ্গনের কবলে পড়ার আগেই ক্লিনিকের সব মালামাল সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমরা এখন আশ্রয়ন কেন্দ্রে ক্লিনিকের কার্যক্রম চালাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আবু আল হাজ্জাজ বলেন, বিকল্প হিসেবে আশ্রয়ন কেন্দ্রে কার্যক্রম চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্লিনিকের জন্য নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে।
Leave a Reply