এম আর মাইনউদ্দীন, দৈনিক খবরের দলিল।
স্বাধীন বাংলায় শেখ হাসিনা এবং গণতন্ত্র এক ও অভিন্ন সত্ত্বা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশের গণতন্ত্রের পথকে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫-১৯৯৬ সাল, দীর্ঘ এই ২১ বছরের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে প্রাণ দিয়েছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মী। অবশেষে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করলে গণতান্ত্রিক ধারার শুভ সূচনা হয়। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্রের ওপর যখনই আঘাত এসেছে তখনই জাতির সামনে গণতন্ত্রের ত্রাণকর্তা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১১ জুন ২০২১ খ্রি.) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জামাত-বিএনপি-ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন গং এর নীলনঁকশার কারণেই ১/১১ এর পটভূমি রচিত হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল রাজনীতি থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে দূরে সরিয়ে দেওয়া। যার কারণে তাঁকে বিদেশ থেকে দেশে আসতে নানাধরণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ২০০৭ সালের ৭ই মে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। এতে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার ফলে ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রীকে গ্রেফতার করে। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরূদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কারাগারে থাকাকালে শেখ হাসিনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এমনকি কারা অভ্যন্তরে তাঁকে হত্যা চেষ্টাও করা হয়।
সে সময় চিকিৎসার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তাঁর মুক্তির জোরালো দাবি ওঠে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতীম, সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসী ক্রমাগত অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন, আপোসহীন মনোভাব এবং অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালের ১১ই জুন শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের।
জননেত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস দু’টি কারণে আমাদের যুবসমাজের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ; (১) সামাজিক ন্যায় বিচার, সত্য ও গণতন্ত্রের পক্ষে থাকলে কোন অবিচার ও শাসকগোষ্ঠীর জুলুম কাউকে কোন দিন অন্তরীণ রাখতে পারে না। (২) নেত্রীর কারাবরণ থেকে মুক্তির দিবস তাকে অনেক গুণ জনপ্রিয় করে তোলে এবং রাজনৈতিকভাবে প্রজ্ঞাশীল করে তোলে; যার ফলশ্রুতিতে তিনি পর পর তিন বারের বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে আর্বিভূত হন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হচ্ছে তাঁরই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে। এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পিতার ন্যায় আপোসহীন মনোভাব নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়। জনগণের মুক্তি আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন। অসংখ্যবার মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়েছে। জনগণের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মত নিরবচ্ছিন্নভাবে পথ চলেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ বিশ্বে সমহিমায় উজ্জ্বল এদেশের জনগণের প্রাণপ্রিয় নেত্রী গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা মানেই দুর্গম পথের নির্ভীক যাত্রী।
Leave a Reply