গত ইং ২৩/০৭/২০২১খ্রিঃ দুপুর অনুমান ০২.২০ ঘটিকায় কোতয়ালী থানাধীন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোতয়ালী থানাকে অবহিত করলে তাৎক্ষনিক ভাবে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ০৩ জন ট্রাক চালক ও ০৩ জন ট্রাক চালকের সহযোগীকে আটক করে এবং ০৩টি ট্রাক জব্দ করে। পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উক্ত ঘটনার বিষয়ে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলার জন্য এজাহার দাখিল করলে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা নং-৫৩, তারিখ-২৪/০৭/২০২১খ্রিঃ, ধারা-৪১৯/৪২০/৩৭৯/৫১১ পেনাল কোড রুজু হয়। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিরস্ত্র) মোঃ শাহ্ আলম’সহ কোতয়ালী থানার একটি চৌকষ তদন্ত টিম মামলার রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতারের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে তদন্তকার্যক্রম শুরু করে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক দিক নির্দেশনায় তদন্ত টিম অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যে মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত ০২ জন আসামী ১। সোহেল ফকির (৪২), পিতা- মোঃ শাহিদ মেকার, সাং-শ্রীপুর পারচিথুলিয়া, থানা-পাবনা, জেলা-পাবনা ও ২। মোঃ নাছিম হোসেন (২৯), পিতা-মৃত মোসলেম উদ্দিন মন্ডল, সাং- ভাউডাঙ্গা, থানা-পাবনা, জেলা-পাবনাদ্বয়কে পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ধৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- উক্ত আসামীদ্বয় দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজসে অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন গাড়ির চালকের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। এরইধারাবাহিকতায় তারা প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে দিনাজপুরস্থ ট্রাক ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্যাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের মনজুরুল আলমকে গত ২৩/০৭/২০২১খ্রিঃ তারিখ অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় মোবাইল ফোনে মাধ্যমে আসামী সোহেল ফকির নিজেকে ডাঃ রেজাউল করিম বলে পরিচয় দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রুগীদের জন্য সরবরাহকৃত অক্সিজেনের খালি সিলিন্ডার ঢাকায় প্রেরণ ও ঢাকা হতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার আনার কথা বলে ট্রাক প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে ০৩ টি ট্রাক ভাড়া করে। শ্রমিক ইউনিয়নের মনজুরুল উক্ত বিষয়টি ট্রাকের চালকের সাথে আলোচনা করলে ট্রাকের চালকেরা প্রস্তাবিত ভাড়ায় যেতে রাজী হয়। এ সময় তারাও কথিত ডাঃ রেজাউল করিম এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে ভাড়া ও গন্তব্যস্থল জেনে নেয়। অতঃপর ট্রাক চালকেরা শ্রমিক ইউনিয়ন হতে ট্রাক ভাড়া চালান নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে এসে কথিত ডাঃ রেজাউল করিমকে ফোন করে। ঐ সময় প্রতারক সোহেল ফকির রংপুর মেডিকেলে আছে এবং তাদের কাছে আসছে/আসছি বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। একপর্যায়ে প্রতারক সোহেল ফকির বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল ফ্রি করে দেয়ার কথা বলে ০৩টি ট্রাকের জন্য ট্রাক চালকদের কাছ থেকে ৩০০০/- টাকা একটি বিকাশ নাম্বারে দেওয়ার জন্য বললে ০৩ চালক সেই বিকাশ নাম্বারে ৩০০০/- টাকা পাঠিয়ে দেয়। বিকাশে টাকা পাওয়া মাত্র বর্ণিত প্রতারক তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।
আসামীদ্বয় ইউটিউব, ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন গাড়ির পিছনে থাকা মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ট্রাক ভাড়া প্রদানকারী দালালের সাথে কথা বলে প্রতারণার ক্ষেত্র তৈরী করে এবং ৩-৫ হাজার টাকা নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী টার্গেট নির্ধারণ করে তাদের প্রতারণা করা অব্যাহত রাখে। এই প্রতারক চক্র গত ২/৩ বছর যাবত সারা দেশে একই কায়দায় অসংখ্য প্রতারনা করেছে। টাকার পরিমান কম হওয়ায় অনেকেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এড়িয়ে যায়।
অত্র মামলার ঘটনায় প্রতারকদ্বয় ধৃত হওয়ায় ও জিজ্ঞাসাবাদে তাদের প্রতারণার কৌশল উন্মোচিত হলো। প্রতারকদের প্রতারণা হতে বাঁচতে সর্বসাধারণকে গাড়ি ভাড়া প্রদান ও মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মোঃ মমিনুর রহমান, রংপুর, মোবাইল নম্বর ০১৭২৫৩৭০৩৮১
Leave a Reply