লালমনিরহাট পৌসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মাঝাপাড়া এলাকার কাচামাল ব্যবসায়ি আব্দুর জলিলের গত ২২ শে জুলাই মৃত্য হয়। পরের দিন সকালে লোকজনকে জলিলের বউ মমিনা বেগম বলেন তার স্বামী স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
পরে জানাজা নামাজ শেষে তাকে কবরে দাফন করা হয়। ২৪ জুলাই বিকালে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে বাড়িতে মিলাদ মাহফিলও করা হয়। সেখানে মরহুমের বউ মরহুমের বড় ভাই আব্দুর রশিদের সাথে একটু কথা কাটা কাটি হয়। সেখানেই রশিদের সন্দেহ হয় যে তার ভাইকে ষড়যন্ত্র মূলক হত্যা করা হয়েছে।
গত ২৫ জুলাই মরহুম আঃ জলিলের বড় ভাই আব্দুর রশিদ লালমনিরহাট পুলিশ সুপার ও সদর থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের সূত্র ধরেই লালমনিরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ- সার্কেল) মারুফা জামাল ঘটনা স্থানে যান। সেই রাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম ও এস আই সাদ্দাম হোসেন বেশ কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন।
গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করে সবাইকে ছেড়েও দেওয়া হয়। পুলিশ যেন কোন কিছুই বুঝতে পারছে না। অবশেষে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে কিছু তথ্য পান পুলিশ। তার পর জলিলের বউ মমিনা বেগম ও স্থানীয় ওষুধ দোকানদার রব্বানীসহ আরো দুজনকে লালমনিরহাট ডিবি কার্যালয়ে ২৭ জুলাই দুপুরে নিয়ে যায় পুলিশ ।
সেখানে মমিনা ও রব্বানী জলিলকে হত্যার বিষয় স্বীকার করে। তারা দুজন পরকীয়া থাকার কারনে এই হত্যা করেছে বলে জানা যায়। পরে রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ- সার্কেল) মারুফা জামাল মমিনাকে সাথে নিয়ে তার বাড়িতে এসে আলামত সংগ্রহ করেন। এই হত্যায় দুইজন জড়িত থাকায় মমিনা আর রব্বানীরকে আটক করে বাকি দুজকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
আরও জানা যায়, লালমনিরহাট সদরের খুনিয়াগাছ এলাকার শাহার আলীর ছেলে আব্দুল জলিল প্রায় ৮ বছর আগে সাপটানা মাঝাপাড়া এলাকায় বউসহ বসবাস করে আসছেন। এদিকে ঢঢ গাছ এলাকায় রমজান আলীর ছেলে তিনদীঘি বাজারের ওষুধ দোকানী গোলাম রাব্বানীর সাথে মমিনার পরকীয়া প্রেমে গড়ে উঠে। সেই কারনে গত ২২ জুলাই রাতে জলিলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। মরহুমের বড় ভাই আব্দুর রশিদ ও ছোট ভাই দুলু জানায়, দুজন মিলে আমাদের ভাইকে হত্যা করে।
অথচ স্ট্রোক করে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে নাটকীয় প্রচারণা চালায় । আমরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই যে, আমাদের অভিযোগ তারাতারি আমলে নিয়েছে। এ বিষয়ে লালমনিরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ- সার্কেল) মারুফা জামাল বলেন, অভিযোগের আলোকে বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করে মমিনা বেগম ও রব্বানীকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। তারা যে পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যা করেছে সেই তথ্য পাওয়া গেছে।
Leave a Reply