ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঢল সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে ভাটিতে সহস্রাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে।
নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন রোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র জানায়, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া খালিশাচাপানী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ৭৫) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমার লেভেল ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। দুপুর ১২টা পর্যন্ত একই লেভেলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদী অবববাহিকার চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়।
ডিমলা উপজেলার কিছামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশ পুকুর, ঝুনাগাছ চাঁপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, ভেন্ডাবাড়ি, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ,ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার মানুষজন গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদে সরে গেছে। এতে করে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
ছাতুনামা কেল্লাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ ৬৫ বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়ছে। এতে এলাকার প্রায় প্রতি বাড়িই হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।
একই এলাকার সুমার আলী (৫৫) বলেন, বাড়িতে রান্না করার ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে দোকান থেকে শুকনা খাবার কিনে নিয়ে খেতে হচ্ছে। দোকানের সামনেও হাঁটু পানি। এলাকায় শুকনা খাবারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, রাতে প্রচণ্ড বেগে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ছাতুনামা কেল্লাবাড়ি, ভেন্ডাবাড়ি এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার বন্যা কবলিত হয়েছে।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, পরিস্থিতি ভালো না। উজানের ঢল প্রচণ্ডভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এবার ভয়ঙ্কর বন্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখে তিস্তা অববাহিকা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রানী রায় বলেন, আমরা সর্তক রয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Leave a Reply