স্টাফ রিপোর্টার,
দৈনিক খবরের দলিল।
জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে ঈদের আগেই গণপরিবহন চালু করার কথা জানিয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, লকডাউনের পর জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে সরকার ঈদের আগে গণপরিবহন চালুর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ১ লা মে শনিবার তার সরকারি বাসা থেকে নিয়মিত বিফ্রিংয়ে এ কথা জানান।
রোববার থেকে গণপরিবহন চালু করতে যে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি আন্দোলন, বিক্ষোভে না গিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধৈর্য ধরারও আহ্বান জানান।
কাদের বলেন, ‘ঈদ ও রমজানের কথা বিবেচনা করে ও শ্রমজীবী মানুষ যারা দোকানপাট, শপিংমলে কাজ করেন তাদের কথা চিন্তা করে এরইমধ্যেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে।’
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। শুরুতে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও পরে মহানগরগুলোতে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।
শেষ দিকে এসে সময় বেঁধে দিয়ে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখারও সিদ্ধান্ত আসে। পরে সরকার আরও দুই দিনের জন্য বিধিনিষেধের সময় বাড়ায়।
কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর বিধিনিষেধসহ লকডাউন আরোপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ায় সরকার।
সেটা শেষ হলে আবারও সাত দিন বাড়িয়ে লকডাউন ৫ মে পর্যন্ত করে সরকার।
কঠোর লকডাউন নিশ্চিতে আরোপ করা হয় ১৩ দফা বিধিনিষেধ। এর মধ্যে শপিং মল, দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থাকলেও মানুষের জীবন-জীবিকা বিবেচনায় লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
চলমান লকডাউনের মধ্যে ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও শপিং মল আরও বেশি সময় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
ব্রিফিংয়ে শ্রমজীবী সকলকে মে দিবসের শুভেচ্ছাও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আজ ১ লা মে, বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস তথা মে দিবস। শ্রমিকদের লড়াই, সংহতি, দৃঢ়তা ও রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা অর্জিত বিজয় দিবসই মে দিবস।
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগেই বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। একই দিনে বাংলাদেশ আইএলও এর ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে যা ছিল একটি বিরল ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু সরকার প্রথম শ্রমনীতি ঘোষণা করেন, যেখানে মালিক শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন, শিল্পের শান্তি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা এবং কল্যাণের প্রতি জোর দেয়া হয়।
‘জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শোষিত, বঞ্চিচ, নিপীড়িত ও মেহনতী মানুষের অধিকার রক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’
‘শেখ হাসিনা সরকার শ্রমিক বান্ধব সরকার, শেখ হাসিনা সরকারের চেষ্টায় শিশুশ্রম নিষিদ্ধ ও শ্রম আইন বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, কৃষি শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করেছে সরকার।’
এ সময় ঈদের আগেই বিভিন্ন কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি করোনা নিয়ে যতই অপপ্রচার করুক তাতে জনগণ বিশ্বাস করে না এবং সাড়া দেয় না। শেখ হাসিনার মানবিক নেতৃত্বের প্রতি জনগণের আস্থা অবিচল আর জনগণের প্রতি সুদৃঢ় কমিটমেন্ট থেকেই সরকার সংক্রমণ রোধ ও চিকিৎসায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘করোনাকে পুঁজি করে যারা অপপ্রচারের বাণিজ্য করছে তারাই প্রকারান্তরে নানা অনিয়মের প্রশ্রয়দাতা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একদিকে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে অপরদিকে অনিয়ম, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিলে বলে বিরোধী দলকে দমন করছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বকে পবিত্র সেবা হিসেবে নিয়েছে। সংকট ও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের সহজাত ঐতিহ্য।
‘৭০ সালে ১২ নভেম্বর ভয়াল ঘুর্ণিঝড়ে জীবন ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় যখন তখন বঙ্গবন্ধু নির্বাচন কর্মকাণ্ড স্থগিত করে বলেছিলেন নির্বাচন বড় কথা নয়, দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন রাজনীতি। তাই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন দুর্গত মানুষের কাছে।
Leave a Reply